Virtue and importance of Ramadan(রোজার ফজিলত এবং গুরুত্ব)


মহান আল্লাহ তাআলার বাণী- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মত তোমাদের উপরও রোযা ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার। (সুরা বাকারা-১৮৩)


আল্লাহ্‌র রসূল [] বলেছেন,

যখন রামাদ্বান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজাসমূহ খোলা হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয় এবং শয়তানগুলো শৃংখলাবদ্ধ হয়।

সহীহ আল-বুখারী, হাদীস ১৮০০


হযরত আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আগমন করে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন, যার দ্বারা আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বলেন, তুমি রোযা রাখ, কেননা এর সমতুল্য কিছু নেই। আমি পুনরায় তার নিকট এসে একই কথা বললাম। তিনি বললেন, তুমি রোযা রাখ।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৪৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৮৯৩; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৬; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫৩০

 হাদীস : তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, একদা জনৈক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে আগমন করে। তার মাথার চুল ছিল ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত। সে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! আমাকে বলুন, আল্লাহ আমার উপর কত ওয়াক্ত নামায ফরজ করেছেন? রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত। তবে তুমি যদি নফল নামায পড় তবে তা স্বতন্ত্র কথা। লোকটি বলল,আমাকে বলুন, আল্লাহ আমার উপর কতটা রোযা ফরজ করেছেন? রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন,গোটা রমজান মাস,তবে তুমি যদি নফল রোযা রাখ তবে তা স্বতন্ত্র কথা। লোকটি আবার বলল, রাসূলুল্লাহ (সঃ)! আমাকে বলুন, আল্লাহ আমার উপর কি পরিমান যাকাত ফরজ করেছেন? এবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে ইসলামের বিধি বিধান জানিয়ে দিলেন। অতপর লোকটি বলল, সেই মহান সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য বিধান দিয়ে সম্মানীত করেছেন। মহান আল্লাহ আমার উপর যা ফরজ করেছেন,আমি তা কম বেশি করবো না।
লোকটির মন্তব্য শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল। অথবা বললেন (বর্ণনাকারীর সন্দেহ), সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।
(ছহীহ বোখারী,প্রথম খন্ড, পৃষ্টা ৩৩৩)
রোযার মর্যাদা। (হাদীস নং ৯৩৫)
হাদীসের পাতা থেকে

হাদীস : আবূ হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুল (সঃ) ইশরাদ করেছেন, (গুনাহ হতে বাঁচার জন্য) রোযা ঢাল স্বরূপ। সুতরাং রোযাদার অশ্লীল কথা বলবে না বা জাহেলী আচরণ করবে না। কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত হলে অথবা গালমন্দ করলে সে তাকে দুই বার বলবে, আমি রোযাদার।
তিনি আরো বলেন, যার হাতে আমার জীবন সেই সত্তার শপথ! রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ মহান আল্লাহর নিকট কস্তুরীর সুগন্ধ হতেও অতি উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেন, রোযাদার খাদ্য ,পানীয়,ও কামভাব পরিত্যাগ করে আমার উদ্দেশেই রোযা রাখে। সুতরাং আমি তাকে বিশেষভাবে রোযার পুরস্কার দান করবো। আর নেক কাজের পুরস্কার দশ গুণ পর্যন্ত দেয়া হবে। (ছহীহ বোখারী,প্রথম খন্ড,পৃষ্টা ৩৩৩)
যে ঈমান ও বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের আশায় রমজানের রোযা রাখে। (হাদীস নং ৯৩৮)
হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন, যে ঈমান ও বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের আশায় শবে কদরে নামায পড়ে এবং রমজানের রোযা রাখবে,তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বোখারী,১/৩৩৪)
ঈদের দুটি মাসই ঊনত্রিশ দিন হয় না। (হাদীস নং ৯৪০)

হাদীস : আবু বাকরা (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে রেওয়ায়াত করেন,নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন,এমন দুটি মাস আছে যার উভয়টি (পর পর) ঘাটতি অর্থাৎ ঊনত্রিশ দিন হয় না।আর তা হল ঈদের দুটি মাস রমজান এবং যিলহজ্ব। (বোখারী,১/৩৩৪)
রমজানের একদিন বা দুদিন পূর্বে রোযা রাখা যাবে না। (হাদীস নং ৯৪১)
হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন, তোমাদের কেউ রমজানের একদিন বা দুদিন পূর্বে নফল রোযা রাখা যাবে না। তবে কেউ যদি প্রতিমাসে এ রোযা রাখতে অভ্যস্ত ,তাহলে রাখতে পার। (বোখারী,১/৩৩৪)
সেহরী ও ফজরের নামাজের মাঝখানে সময়ের ব্যবধান। (হাদীস নং ৯৪৩)
হাদীস: যায়েদ বিন সাবেত (রা বলের, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সা এর সাথে সেহরী খেয়েছি। তার পর নামায পড়তে দাড়িঁয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যায়দ ইবনে সাবেত (রাঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম,সেহরী ও আযানের মাঝখানে কত সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন,পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার মত সময়ের ব্যবধান ছিল। (বোখারী,১/৩৩৫)
সেহরী খাওয়ার কল্যাণ বরকত লাভ হয়। (হাদীস নং ৯৪৪)
হাদীস : হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) বলেছেন, তোমরা সেহরী খাও। কেননা সেহরী খাওয়ায় বরকত লাভ হয়। (বোখারী,১/৩৩৫)
রোযাদার ভূলবশতঃ পানাহার করলে,তার হুকুম। (হাদীস নং ৯৪৮)
হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) বলেছেন, রোযাদার যদি ভুল করে কিছু খায় বা পান করে, তা হলে সে (ইফতার না করে) রোযা পূর্ণ করবে।কেননা আল্লাহ তায়ালা তাকে পানাহার করিয়েছেন। (বোখারী, ১/৩৩৫)
সফরে রোযা রাখা না রাখা উভয়ের অনুমতি আছে। (হাদীস নং ৯৫০)
হাদীস : হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হামযা ইবনে আমরুল আসলামী (রাঃ) অধিক মাত্রায় রোযা রাখতে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী করীম (সঃ) কে বললেন, হে রাসুল (সঃ)! আমি সফরেও রোযা রেখে থাকি। নবী করীম (সঃ) বললেন, সফর অবস্থায় তুমি ইচ্ছা করলে রোযা নাও রাখতে পার।
(বেখারী , ১/৩৩৫)
মৃত ব্যক্তির ফরয রোযার কাজা থাকলে করণীয়। (হাদীস নং ৯৫৩)
হাদীস : হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, মৃত ব্যক্তির উপর রোযার কাজা থাকলে অভিভাবক তার পক্ষ থেকে তা আদায় করবে। (বোখারী,১/৩৩৬)
সূর্যাস্তের সাথে সাথে অনতিবিলম্বে ইফতার করা। (হাদীস নং ৯৫৫)
হাদীস : সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইশরাদ করেছেন, যতদিন লোকেরা তাড়াতাড়ি (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) ইফতার করবে , ততদিন কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে না।
(ছহীহ বোখারী শরীফ,১/ ৩৩৬)
প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোযা রাখা। (হাদীস নং ৯৫৮)
হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-বলতে শুনেছি,যে ব্যক্তি রমযানের রাতে ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় তারাবীহর নামাযে দাঁড়ায় (নামায আদায় করে), তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বোখারী, ১/৩৩৮)
লাইলাতুল কদরের ফযীলত। (হাদীস নং ৯৬৭)
হাদীস : হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) ইশরাদ করেছেন,যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমযানের রোযা রাখে , শবে কদরের রাত্রে দাঁড়ায়, তার আগেকার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বোখারী,১/৩৩৮)


Post a Comment

Previous Post Next Post